অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশের শহরে বসবাসকারী মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মাটি ছাড়া সবজি চাষ। অল্প সময়ে ঝামলেহীন এ উপায়ে শাক-সবজি চাষ করা যায়। এখন মাটিবিহীন ছোট পাত্রে উৎপাদন হচ্ছে টমেটো, লাকশাক, লাউ, লেটুস, লাউ, কাঁচামরিচ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শসা, খিরা, ক্যাপসিকাম, স্ট্রবেরি, মটরশুঁটিসহ নানা ফসল।
মাটি ছাড়া চাষাবাদের এই বিশেষ পদ্ধতির নাম হাইড্রোপনিক। গবেষকরা বলছেন, এ পদ্ধতিতে বাড়ির বারান্দা, ছাদ, উঠানে প্লাস্টিকের পট বা পলি টানেলে অধিক শস্য চাষ করে পারিবারিক চাহিদার অনেকাংশই পূরণ করা সম্ভব হবে। সেই সাথে অবসর সময়ও ভালো কাটে।
যেখানে স্বাভাবিক চাষের জমি কম বা জমি একেবারেই নেই, সেখানে পানিতে এ হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে প্রথমে সাফল্য পান বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের কৃষিবিজ্ঞানীরা। তাদের দেখানো পথে এখন এটি ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে। পানিতে চাষাবাদের এ পদ্ধতির কেতাবি নাম ‘হাইড্রোপনিক পদ্ধতি। ইউরোপ, আমেরিকা, জাপান, তাইওয়ান, চীন, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া এবং প্রাচ্যের দেশগুলোতে বাণিজ্যিকভাবে হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে সবজি ও ফল উৎপাদন বেশ জনপ্রিয়।
শহরের বাসিন্দাদের যাদের কোনো জমি নেই, তারা পলি টানেল, টব, বালতি, জগ, বোতল, পাতিল, প্লাস্টিকের থালায় অনায়াসে হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে সবজি, ফল ও ফুল উৎপাদন করতে পারবেন। তিনি জানান, এই চাষাবাদে কোনো কীটনাশক বা আগাছানাশক প্রয়োজন পড়ে না। অনায়াসে গড়ে তোলা যায় অরগানিক ফসলের সম্ভার।
সঞ্চালন পদ্ধতিতে গাছের অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য উপাদানগুলো যথাযথ মাত্রায় মিশিয়ে একটি ট্যাঙ্কে নেওয়া হয় এবং পাম্পের সাহায্যে ট্রেতে পুষ্টি দ্রবণ সঞ্চালন করে ফসল উৎপাদন করা যায়। আর সঞ্চালনবিহীন পদ্ধতিতে ট্রেতে গাছের প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান পরিমিত মাত্রায় সরবরাহ করে সরাসরি ফসল উৎপাদন করা হয়।
ছাদে লাল শাকের চাষ পদ্ধতি
মাটির চেয়ে হালকা জৈবপ্রযুক্তির এই মাধ্যমের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন হবে কোকোমাস (নারিকেলের ছোবড়া) ও কোকোডাস্ট (নারিকেলের ছোবড়া থেকে পাওয়া গুঁড়া)। রাজধানীতে যারা বাস করছেন তারা কোকোডাস্ট পাবেন আগারগাঁওয়ের সব নার্সারিতে। পরিমাণে বেশি লাগে, তাই নিতে পারেন ৫০ কেজি ওজনের বস্তাভর্তি কোকোমাস। অন্যদিকে কোকোমাস পাওয়া যাবে লেপতোষক-জাজিম বানানোর দোকানে।
দোকান থেকে অল্প পরিমাণে কোকোডাস্ট নিলে তাতে খুদে জীবাণু বা ক্ষতিকর কোনো কিছুর উপস্থিতি থাকতে পারে। তাই তা শোধন করে নেওয়া ভালো। রাসায়নিকভাবে কৃষি পরীক্ষাগারে, গরম পানি ব্যবহার করে, সেদ্ধ করে কিংবা বালাই ও ছত্রাকনাশক ব্যবহার করে কোকোডাস্টের বিশুদ্ধতা আনা যায়।