অনলাইন ডেস্ক:
বিংশ শতকে ঘটে যাওয়া বিশ্বের ৩২৩টি সাড়া জাগানো সহিংস ও অহিংস আন্দোলনের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, পূর্ণ বিজয় অর্জনে অহিংস আন্দোলনের সফলতার হার ৫৩ শতাংশ। আর সহিংস আন্দোলনে সফলতার হার ২৩ শতাংশ। অহিংস আন্দোলনে সার্বিক ব্যর্থতার হার ২০ শতাংশ, সহিংস আন্দোলনে তা ৬০ শতাংশ। আংশিক সফলতার ক্ষেত্রেও অহিংস আন্দোলনোর হার ২০ শতাংশ, সহিংস আন্দোলনের হার ১০ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস উপলক্ষে শনিবার অনুষ্ঠিত এক অনলাইন গোলটেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাব্রতী সংস্থা দি হাঙ্গার প্রজেক্টের উদ্যোগে আয়োজিত এ বৈঠকে সঞ্চালনা করেন হাঙ্গার প্রজেক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর ও গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. বদিউল আলম মজুমদার। বক্তব্য দেন সৈয়দ আবুল মকসুদ, ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর, রাষ্ট্রদূত ফারুক সোবহান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দি হাঙ্গার প্রেজেক্টের প্রজেক্ট ম্যানেজার সৈকত আইচ। লিখিত প্রবন্ধে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এরিকা চেনোথ ও মারিয়া স্টিফানের যৌথ গবেষণায় পাওয়া সহিংস ও অহিংস আন্দোলনের তুলনামূলক বিশ্লেষণ জরিপ তুলে ধরা হয়।
বিশ্লেষণ জরিপ বলা হয়, অহিংসা তত্ত্বের মূল বিষয় হলো, শাসকদের ক্ষমতা জনগণের যে ‘সম্মতি’র ওপর নির্ভর করে, তাকে প্রত্যাহার করে নেয়া। জনগণের সম্মতি প্রত্যাহার এবং অসহযোগিতা শাসকের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে, যার ফলে শাসক ক্ষমতাকেন্দ্রগুলোর ওপর থেকে নিজের নিয়ন্ত্রণ হারায়। যার ফলে হয় তাকে আন্দোলনের দাবিনামার সঙ্গে আপস করতে হয় অথবা ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আমাদের প্রত্যাশার মাত্রা এখন এত সীমিত হয়ে গেছে যে, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা-কর্মীরা একসঙ্গে বসে চা খেলে, বনভোজন করলে আমরা অনেক খুশি হই। এটা অবশ্যই একটা ভালো ব্যাপার। কিন্তু জাতীয় পর্যায়ে অভিন্ন জাতীয় বিষয়গুলোকে সামনে রেখে জাতীয় কোনো ঘোষণা আমরা দেখতে পাচ্ছি না।
ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, এই উপমহাদেশে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার তিনটি ধারা ছিল। একটি হচ্ছে গৌতমবুদ্ধের চিন্তায় অনুপ্রাণিত হয়ে সম্রাট অশোকার ধারা, দ্বিতীয় ধারাটি হচ্ছে বাংলার বাউল ধারা, আরেকটি ধারা হচ্ছে মহাত্মা গান্ধীর ধারা।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট যখন স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্যদের মধ্যে শান্তি, সম্প্রীতি সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ শুরু করে, তখন দলগুলো নিজেদের মধ্যে একসঙ্গে বসতে চাইত না। তবে ইতোমধ্যেই দেশের ২০টির মতো উপজেলায় রাজনৈতিক দলগুলো আচরণবিধিতে স্বাক্ষর করেছে।