মঙ্গলবার ৬ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ ২৩শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. ইউনূসের বিচার শুরু রাকাব আরডিএ রেল ভবন ও শিক্ষাবোর্ডে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে লিটনের মতবিনিময় মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনকে বিজয়ী করতে নির্বাচনী প্রচারণা সভা প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও আইনমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক রাজশাহীর চারঘাটে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন বাগমারায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিশ^ পরিবেশ দিবস পালিত আগামী নির্বাচন একটা চ্যালেঞ্জ: শেখ হাসিনা আমদানির খবরে ঝাঁজ কমেছে পেঁয়াজের রাসিক নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ১৬ নেতাকর্মীকে বহিষ্কারের সুপারিশ ‘প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার’ পেয়েছে রাসিক

ফের দখল উত্তরের সেই জমি

নিউজটি শেয়ার করুন

অনলাইন ডেস্ক:

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) লাভের গুড় খাচ্ছে পিঁপড়ায়! প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের উদ্ধার করা গাবতলী এলাকায় ডিএনসিসির ১৫৭ বিঘা জমি ফের চলে গেছে প্রভাবশালীদের দখলে। কেউ নিজে করছেন ইট-বালু-সুরকির ব্যবসা। অধিকাংশ দখলদার ওই জমি প্লট করে ভাড়া দিয়েছেন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছে। প্রায় ১১০০ কোটি টাকা বাজার মূল্যের এ জমি থেকে মাসে দেড় কোটি টাকার ভাড়া আদায় হলেও জানে না সিটি করপোরেশন। ২০১৭ সালে মেয়র থাকাকালীন আনিসুল হক এসব অবৈধ দখল উচ্ছেদে হাত দিলেও তার মৃত্যুর পর থেমে যায় এ উদ্যোগ। এরপর তার উদ্ধার করা অংশও পুনরায় দখল হয়ে যায়।

সরেজমিন দেখা গেছে, রামচন্দ্রপুর স্লুইস গেট থেকে ঢাকা-আরিচা সড়ক পর্যন্ত বেড়িবাঁধ সড়কের দুই পাশে আনিসুল হকের উদ্ধার করা জমিতে গড়ে উঠেছে শত শত অবৈধ দোকান, বাস-ট্রাক স্ট্যান্ড। বেড়িবাঁধ থেকে তুরাগ নদের ওয়াকওয়ে পর্যন্ত ডিএনসিসির পুরো জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে পাঁচ শতাধিক ইট-বালু-সুরকির আড়ত। রয়েছে পাথর ভাঙা কারখানা, কয়লার আড়ত, ভাতের হোটেল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গোডাউন, জ্বালানির দোকান থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলের অফিসও। উদ্ধার করা জমির বিভিন্ন স্থানে এখনো উত্তর সিটির সাইনবোর্ড লাগানো রয়েছে। লেখা রয়েছে- ‘এই সম্পত্তির মালিক ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত।’ সাইন বোর্ডের পাশেই রয়েছে ইট-বালুর দোকান। কিছু সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলা হয়েছে। এর মাঝেই আবার নতুন করে টাঙানো হয়েছে পাউবো থেকে ইজারা নেওয়ার সাইনবোর্ড। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জমি উত্তর সিটির হলেও প্রভাবশালী মহল ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা নিয়মিত প্লটের মালিককে ভাড়া পরিশোধ করছেন। কেউ ভাড়া দিচ্ছেন মাসিক, কেউ বার্ষিক। উত্তর সিটি করপোরেশন বলছে, ওই ১৫৭ বিঘা বা ৫২ একর ডিএনসিসির সম্পত্তি। জমি কাউকে বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। তারা কোনো রাজস্ব পায় না, কোনো ভাড়া তোলে না। এদিকে প্লটের মালিক দাবিদার এমন কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, এই জমি তাদের অবিভক্ত সিটি করপোরেশন থেকে ইজারা নেওয়া। প্রশ্ন উঠেছে- গাবতলীর এই ১৫৭ বিঘা জমি আসলে কার? কারা আদায় করছেন কোটি টাকা ভাড়া? টাকার ভাগ কোথায় কোথায় যাচ্ছে? এ বিষয়ে উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সিটির সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেছি। গাবতলীর ৫২ একর জমিতে ডিএনসিসির অনেক কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে। অচিরেই ওই জমি দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। আমি গাবতলী এলাকা পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে সম্পত্তি বিভাগকে নির্দেশনাও দিয়েছি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৫ সালে সিটি করপোরেশনে ৩০০ প্লট বরাদ্দের জন্য যারা আবেদন করেছিলেন, তাদের দখলেই আছে ডিএনসিসির ওই ১৫৭ বিঘা সম্পত্তি। তাদের কেউ কেউ নিজেরা ব্যবসা করছেন। অধিকাংশই অন্যদের কাছে ইট-বালু-সুরকি ব্যবসার জন্য প্লট ভাড়া দিয়েছেন। যারা ভাড়া নিয়েছেন তারা আবার প্লটের আংশিক জমি একাধিক জনের কাছে ভাড়া দিয়েছেন। সব মিলে পাঁচ শতাধিক প্লটে চলছে ইট-বালু-সুরকির ব্যবসা। আকার ও অবস্থানভেদে প্রতি প্লট থেকে মাসে ভাড়া তোলা হচ্ছে ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ইট, পাথর ও বালুর মূল ঘাট এলাকার প্রতিটি প্লটের মাসিক ভাড়া ৫০ হাজার টাকার বেশি। কেউ বার্ষিক ভাড়া নিচ্ছেন। মেহরাব এন্টারপ্রাইজ ইট-বালুর ব্যবসার জন্য বার্ষিক ভাড়া দিচ্ছে সাড়ে ৮ লাখ টাকা। রাস্তার পাশে উচ্ছেদ আতঙ্ক থাকায় তার পাশের প্লটটির বার্ষিক ভাড়া ৭ লাখ টাকা। মোহাম্মদ আলী এন্টারপ্রাইজ তিন কাঠার প্লটের জন্য মাসে ১০ হাজার টাকা ভাড়া দেয়। এর বাইরে ভাঙ্গাড়ির দোকান, নতুন-পুরনো টায়ারের দোকান, চায়ের দোকান, ভাতের হোটেলসহ আরও প্রায় চার থেকে পাঁচশ দোকান গড়ে উঠেছে ওই জমিতে। নদীর পাড়েও ১০-১৫ হাজার টাকা অগ্রিম নিয়ে ও মাসিক এক-দেড় হাজার টাকা ভাড়ায় চায়ের দোকান বসিয়েছেন কেউ কেউ। প্লট ভাড়া নেওয়া একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘এসব দোকান থেকে মাসে দেড় কোটি টাকার বেশি ভাড়া উঠছে। যারা আমাদের জায়গা দিয়েছেন, আমরা তাদের ভাড়া দিচ্ছি। এটা সরকারি জায়গা হলে সরকারকে ভাড়া দিতে আমাদের আপত্তি নেই। আমরা ব্যবসা করতে পারলে খুশি।’ জমির দাম : বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী ডিএনসিসির ওই এলাকায় প্রতি কাঠা জমির মূল্য প্রায় ৩৫ লাখ টাকা। সেই হিসাবে ১৫৭ বিঘা জমির দাম প্রায় ১১০০ কোটি টাকা। তবে নদীর পাড়ের বাণিজ্যিক জমি হওয়ায় দাম আরও বেশি হবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

 

তিন বছরে রাজস্ব আসত ৫৪ কোটি টাকা : ২০১৭ সালে ওই জমি অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়। আনিসুল হকের মৃত্যুর পর ফের তা বেদখল হয়। অথচ, ভাড়া তুললেও মাসে দেড় কোটি টাকা করে তিন বছরে ডিএনসিসি রাজস্ব পেত ৫৪ কোটি টাকা।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গাবতলীর ওই ৫২ একর জমি সিটি করপোরেশন কাউকে ভাড়া বা বরাদ্দ দেয়নি। সেখান থেকে সিটি করপোরেশন কোনো রাজস্ব পায় না। আমাদের কোনো কর্মী সেখান থেকে টাকা-পয়সা আনে না। কাদের ভাড়া দিয়ে ব্যবসায়ীরা দোকান বসিয়েছে তা তারাই জানেন। শিগগিরই এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জমি উদ্ধার করা হবে। ওই জমিতে আধুনিক জবেহখানা, আধুনিক ওয়ার্কশপ, খেলার মাঠ তৈরিসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। দখলদাররা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ওই জমি ইজারা নিয়েছে বলে যেসব কাগজপত্র দেখায় সেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।

এ বিষয়ে গাবতলী ইট, পাথর ও বালু ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মাহমুদুল হাসান মনির বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে ২০০৫ সালে সালামির মাধ্যমে আমরা ৩০০ প্লট বরাদ্দ নিয়ে এখানে ইট-বালু-পাথরের ব্যবসা করছি। সরকারের প্রয়োজনে সরকার যদি এই জমি নেয়, তবে আমাদের ব্যবসা করার জায়গা দিক। ঢাকা শহরের উন্নয়নের জন্য ইট-বালু-পথরের একটা ঘাট থাকা দরকার। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, আমাদের জায়গাটার বৈধতা দেওয়া হোক। আমাদের এই ব্যবসার সঙ্গে প্রায় কয়েক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান জড়িত। সরকারের আমাদের কথাও ভাবা উচিত। ২০১৭ সালের ৫ থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত ওই জমিতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে ডিএনসিসি। তৎকালীন মেয়র প্রয়াত আনিসুল হক ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেন। উদ্ধারের পর টিন দিয়ে সীমানা চিহ্নিত করা হয়। উচ্ছেদ অভিযান শেষে উত্তর সিটির পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড অবিভক্ত সিটি করপোরেশনকে ৫২ একর জমির মালিকানা হস্তান্তর করে। পরে যা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দখলে চলে যায়। পুরো ৫২ একর জমি উদ্ধারের পর ওই জমিতে একটি অ্যাসফল্ট প্ল্যান্ট ও কেন্দ্রীয় পরিবহন ওয়ার্কশপ নির্মাণের পরিকল্পনার কথা তখন বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। তবে আনিসুল হক মারা যাওয়ার পর সেখানে আর টেকসই সীমানাপ্রাচীর তৈরি করেনি ডিএনসিসি। আবার বরাদ্দ দিয়ে ভাড়াও আদায় করেনি। এ সুযোগে দখলদার চক্র ডিএনসিসির সাইনবোর্ড, টিনের সীমানা খুঁটি সরিয়ে আবার দখল করে নেয়।

এই বিভাগের আরও খবর

শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. ইউনূসের বিচার শুরু

নিউজটি শেয়ার করুন

নিউজটি শেয়ার করুনশ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামলায় ড. ইউনূসসহ চারজনের

আগামী নির্বাচন একটা চ্যালেঞ্জ: শেখ হাসিনা

নিউজটি শেয়ার করুন

নিউজটি শেয়ার করুননানামুখী ষড়যন্ত্রের কারণে আগামী নির্বাচনটা চ্যালেঞ্জের হবে জানিয়ে নেতাকর্মীদের সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (৫

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষায় গাছ লাগান : প্রধানমন্ত্রী

নিউজটি শেয়ার করুন

নিউজটি শেয়ার করুনপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষায় বৃক্ষরোপণ করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ২০২৩ সালের বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী

সবচেয়ে বড় বাজেট দিয়েছি, তা বাস্তবায়নে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: প্রধানমন্ত্রী

নিউজটি শেয়ার করুন

নিউজটি শেয়ার করুনঅনলাইন ডেস্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট বাস্তবায়ন করতে সক্ষম।

তীব্র দাবদাহের কারণে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা

নিউজটি শেয়ার করুন

নিউজটি শেয়ার করুনতীব্র দাবদাহের কারণে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম ৫ জুন থেকে ৮ জুন পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। রোববার (৪ জুন)

এরদোয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আঙ্কারায় পৌঁছেছেন রাষ্ট্রপতি

নিউজটি শেয়ার করুন

নিউজটি শেয়ার করুনরাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন তুরস্কের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ছয় দিনের এক সরকারি সফরে আজ সকালে তুর্কিয়ের রাজধানী আঙ্কারায়

%d bloggers like this: